ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন কুড়িগ্রামে সাংবাদিক পেটানো ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীন। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের মেইন বিল্ডিংয়ে শিবির ব্লকের দিকেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার।
আরডিসি নাজিম উদ্দীনের ঢাবির সহপাঠী ও ঘনিষ্ট কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই সময় শিবিরের সঙ্গে বেশ সখ্যতা ছিল নাজিমের। শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডাও দিতেন তিনি। তবে, ছাত্রদলের অ্যাক্টিভ কর্মী হিসেবেই সবাই তাকে জানতেন। ছাত্রজীবন থেকেই ‘বদমেজাজি’ নাজিম মেধাবিও ছিলেন। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন নাজিম উদ্দীন।
নাজিম উদ্দীনের বাবা নেছার আহমেদ জামায়াতের সমর্থক ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ভরতপুরে। অতিদরিদ্র নেছার আহমেদ উপজেলার কাশিপুরে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। ভাই-বোনের মধ্যে নাজিম উদ্দীন বড়।
তার এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, খুবই কষ্ট করে নাজিমকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন তার বাবা। তার স্কুল-কলেজের পরীক্ষার ফি’টাও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জোগাড় করে দিতেন। বাবা গরিব ও নাজিম বেশ মেধাবি হওয়ায় স্কুলের বেতনও নিত না কর্তৃপক্ষ।
মনিরামপুর সরকারি পাইট উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ও মনিরামপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন নাজিম উদ্দীন। কলেজে পড়াকালীনই ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।
নাজিম উদ্দীন যখন মনিরামপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। তখন ওই কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন সন্দ্বীপ ঘোষ। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, ‘নাজিম উদ্দীন ছাত্রদল করতো। সে নিয়মিত ছাত্রদলের মিছিলে যেত।’
তিনি জানান, নাজিম উদ্দীন মামা বাড়িতে মানুষ হয়েছেন। তার মামারাও এন্টি-আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে জানার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভাই আর কত, আমি তো আর পারছি না। এখন বাসায় এলাম।’
কলেজ জীবনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘ভাই আমি ব্যস্ত, পরে কথা বলি।’ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান দাবি করেন, নাজিমের পরিবার (বাবা ও মামারা) মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনীতি করেন না।
উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইউনুস আলী বলেন, ‘তারা (নাজিমের পরিবার) বিএনপি জামায়াতের লোক।’ তবে, ওই ইউনিয়নের মেম্বর গাজী মনসুর রহমান দাবি করেন, ‘তারা (নাজিমের পরিবার) রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগের কেউ কেউ বলছেন, নাজিমের পরিবার আগে যাই করতো না কেনো, এখন আওয়ামী লীগ করে।
এদিকে, সোমবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মহম্মদপুর বাজারে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাংবাদিক নির্যাতন করে সমালোচিত কুড়িগ্রামের কুখ্যাত আরডিসি ও মাগুরার মহম্মদপুরের সাবেক এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।
(সময়টিভি)
No comments:
Post a Comment