Friday, March 20, 2020

ইরাকি ঘাঁটি থেকে প্রত্যাহার হচ্ছে মার্কিন সেনা


.
ইরাকের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সিরীয় সীমান্তের ইউফ্রেতিস নদী তীরবর্তী আল কাইম ঘাঁটি ছাড়াও আরও দুটি ঘাঁটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, এসব ঘাঁটি থেকে প্রত্যাহার করা হলেও ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতির পরিমাণ প্রায় একই থাকবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এই খবর জানিয়েছে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ বার ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা স্বার্থে রকেট হামলা হয়েছে। এসব হামলার জন্য ইরান সমর্থিত গ্রুপগুলোকে দায়ী করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমানে ইরাকের আটটি ঘাঁটিতে মার্কিন সেনা উপস্থিতি রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ঘাঁটি থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে। আল কাইম ঘাঁটিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সপ্তাহেই ইরাকি সেনাবাহিনীর কাছে সরঞ্জাম হস্তান্তর করবে যুক্তরাষ্ট্র।
ইরাকের অন্যতম পুরনো একটি রেল স্টেশনের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে তৈরি হয় আল কাইম ঘাঁটি। সিরীয় সীমান্তবর্তী এই শহরটি ২০১৪ সালে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের অধীনে চলে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর অভিযানে আইএসের পতনের পর ২০১৭ সালে এটির নিয়ন্ত্রণ পায় ইরাকি সেনাবাহিনী।
মার্কিন সেনা কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইএস বিরোধী লড়াইয়ে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সফলতার কারণে (যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন) যৌথবাহিনী কয়েকটি ছোট ঘাঁটি থেকে সেনা পুনর্বিন্যাস করছে। এব ঘাঁটি ইরাকের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আর আমরা অন্য ইরাকি ঘাঁটিগুলো থেকে দায়েশের স্থায়ী পরাজয় নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত রাখবো’। প্রসঙ্গত, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসকে ‘দায়েশ’ নামে উল্লেখ করে থাকে মার্কিন সেনাবাহিনী।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের দাবি বর্তমানে ইরাকে তাদের পাঁচ হাজার দুইশো সেনা রয়েছে। তবে এই বছরের জানুয়ারিতে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার পর ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন সেনা সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে ইরাকি বিক্ষোভকারীদের ঢুকে পড়া এবং জানুয়ারিতে ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে হত্যার পর মধ্যপ্রাচ্যে সেনা উপস্থিতি বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র।

করোনা আতঙ্কের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ভোটগ্রহণ চলছে তিন সংসদীয় আসনে



করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪ ও গাইবান্ধা-৩ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ভোট চলছে।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। এর মধ্যে ঢাকা-১০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও বাকি দুটি আসনে ব্যালট পেপারে ভোট নেয়া হচ্ছে।

বাগেরহাট-৪ আসন ছাড়া বাকি দুটিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছে।

বাগেরহাট-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি এ তিনটি আসনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি।

এদিকে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। যুগান্তরকে তারা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় প্রচার শেষ হয়েছে। শুক্রবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশও ভালো রয়েছে।

তবে করোনাভাইরাসের কারণে ভোটারদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। কোথাও কোথাও মাইকিং করে জনগণকে সচেতনভাবে ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের বাইরে ব্যানার টানিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ঢাকা-১০ : সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস পদত্যাগ করায় ঢাকা-১০ আসনটি গত ২৯ ডিসেম্বর শূন্য ঘোষণা করা হয়।



রাজধানীর ধানমণ্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান, শেরেবাংলা ও লালবাগ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন। তারা হলেন : আওয়ামী লীগের শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিএনপির শেখ রবিউল আলম, জাতীয় পার্টির হাজী মো. শাহজাহান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের কাজী মুহাম্মদ আবদুর রহিম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মিজানুর রহমান।

এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ২৭৫ জন, ভোটকেন্দ্র ১১৭টি ও ভোটকক্ষ ৭৭৬টি। এ আসনটিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। ভোটকেন্দ্রের ঝুঁকি বিবেচনায় পুলিশ ও আনসারের ১৪-১৬ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে। নির্বাচনী এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। থাকবে র‌্যাবের টিমও।

এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকায় আমরা বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রতিটি ভোটকক্ষে জীবাণুনাশক ও টিস্যু রাখা হবে। ভোটারদের হাত ধুয়ে ভোট দিতে এবং ভোট দেয়ার পর আবারও হাত ধোয়ার অনুরোধ জানিয়ে ব্যানার টানানো হয়েছে।

বাগেরহাট-৪ : সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া বাগেরহাট-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের আমিরুল ইসলাম মিলন ও জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রি।

বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়। ফলে দুই প্রার্থীর মধ্যেই হবে লড়াই। এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ১৬ হাজার ৫১০ জন, ভোটকেন্দ্র ১৪৩টি ও ভোটকক্ষ ৬২৯টি।

আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখভালে ২ জন জুডিশিয়াল ও ২৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছেন।

এ আসনের ১৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ৭০৫ জন পুলিশ ও ১ হাজার ৭১৬ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের ২১টি মোবাইল ও ১০টি স্ট্রাইকিং টিম, ১০ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের ১০টি টিম রয়েছে।

এ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী যুগান্তরকে বলেন, ভোটের পরিবেশ ভালো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিচ্ছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা-৩ : এ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ মোট চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তারা হলেন : আওয়ামী লীগের উম্মে কুলসুম স্মৃতি, বিএনপির অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মাইনুল হাসান সাদিক, জাতীয় পার্টির মাইনুর রাব্বী চৌধুরী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি।

সংসদ সদস্য ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনটিতে ভোটার ৪ লাখ ৩৫ হাজার ২১১ জন, ভোটকেন্দ্র ১৩২টি ও ভোটকক্ষ ৭৮৬টি।

সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১০ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের ১৪টি টিম ও পুলিশের ৪০টি টিম টহলে রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখভালে ২ জন জুডিশিয়াল ও ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছেন।

ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে এ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হয়েছে। পরিবেশ ভালো রয়েছে।

মায়ের অবসরের টাকায় কেনা ফ্ল্যাটে কোয়ারেন্টাইন দিতে প্রস্তুত তিনি


ফ্ল্যাটে ওঠার বাকি ছিল আর মাত্র কয়েকদিন। এসি, ফ্রিজসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র ফ্ল্যাটে তুলেছেন। সব সাজানো। তবে দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে ফ্ল্যাটটিকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন আশিষ চক্রবর্তী। তিনি পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এসএসএল ওয়্যারলেসের (সফটওয়্যার শপ লিমিটেড) ডিরেক্টর ও চিফ অপারেটিং অফিসার।

শুক্রবার (২০ মার্চ) সকালে যখন করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপনে সরকারের উদ্যোগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এলাকাবাসী, তখন নিজের ফেসবুক ওয়ালে এই পোস্টটি দেন আশিষ।
তার পোস্টটি হু বুহু তুলে ধরা হলো :

‘আমার মায়ের অবসরের টাকায় এবং আমার যৌথ উদ্যোগে উত্তরা দিয়াবাড়ীতে রাজউকের একটা (এবং একমাত্র) ফ্লাট আছে। দুই সপ্তাহ আগেই এসি, ফ্রিজসহ বেশ কিছু জিনিস কিনেছি। সব সাজনোই আছে। আমার ফ্ল্যাটের চাবি আমি নিজেই সেচ্ছায় দিয়ে দিয়েছি (কেউ এখনো চায়নি)। কোনো কিছুই আনি নাই। আমি জানি না সরকার এটা ব্যাবহার করবেন কি-না? কিন্তু আমাদের সামান্য ত্যাগ যদি এই সময় কারো কাজে আসে আমি তাতেই খুশি। এখন সময় আমাদের বলার, আমার আমার করার না।’

এই পোস্টের এরপর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। তার পোস্টটিতে লাইক পড়েছে ১০ হাজার। প্রায় ১ হাজার কমেন্ট ও ১৪০০ শেয়ার হয়েছে পোস্টটি। এতে কমেন্টে অনেকেই নিজেদের ঘরের ফ্ল্যাট সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়ে সেখানে প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) রাত থেকে করোনাভাইরাসে সন্দেহভাজনদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টর এলাকার দিয়াবাড়িতে রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ভবনে সেন্টার স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কুঞ্জলতা নামের ওই কম্পাউন্ডের ৪টি ভবনের মোট ৩৩৬টি ফ্ল্যাট কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুক্রবার সকালে প্রতিবাদ করেছে দিয়াবাড়ির স্থানীয়রা। কোয়ারেন্টাইন স্থাপনের সিদ্ধান্তের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী বলছেন, আবাসিক এলাকায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। এর ফলে এখানে বসবাসরত প্রায় ৩ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বেন। তারা সড়কে বসে সড়ক অবরোধ করেন।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। এতে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১০ হাজার ৪৮ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৮ হাজার ৪৩৭ জন।

বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন একজন।

আইইডিসিআর বাংলাদেশে সংক্রমণের যে তথ্য দিচ্ছে, এতে দেখা যাচ্ছে, প্রবাসফেরত বা তাদের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিরা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু অনেক প্রবাসফেরতকেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাচ্ছে না। আশকোনায় হজক্যাম্পে এ নিয়ে হট্টগোলও বেঁধেছিল।

এই পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজনদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার দায়িত্ব দেয়া হয় সেনাবাহিনীকে। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তৃতির সম্ভাব্যতা এবং প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুইটি কোয়ারেন্টাইনের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। সেগুলো হলো- বিমানবন্দর সংলগ্ন হজক্যাম্প এবং উত্তরার দিয়াবাড়ি সংলগ্ন রাজউক অ্যাপার্টমেন্ট কোয়ারেন্টাইন।
এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচিত ব্যক্তিবর্গকে বিমানবন্দরে প্রয়োজনীয় ইমিগ্রেশন শেষে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।

করোনাভাইরাস ঠেকাতে দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লী আজ (শুক্রবার) থেকে ২০দিনের জন্য লকডাউন



বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লীকে আজ (শুক্রবার) থেকে ২০দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছে।

দেশটির সবচেয়ে বড় এই যৌনপল্লীতে এই সময়ে খদ্দেররা যাতায়াত করতে পারবে না বলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন


রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিবিসিকে জানিয়েছেন, দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লীকে ঘিরে পাঁচটি গেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু প্রধান গেট খোলা রেখে সেখানে পুলিশের পাহারা বসানো হয়েছে।

তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, যৌনপল্লীর বাসিন্দারা জরুরি প্রয়োজনে পল্লীটির প্রধান গেট দিয়ে পুলিশের অনুমতি নিয়ে বাইরে যেতে পারবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন মিটিয়ে তাকে ফিরতে হবে।

মি: রহমান বলেছেন, যেহেতু এই যৌনপল্লীতে দিনে অনেক খদ্দের যাতায়াত করে, সেকারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। আর সেজন্যই লকডাউনের এই সিদ্ধান্ত।

পুলিশের হিসাব অনুযায়ী এই পল্লীতে ১৬০০জনের মতো যৌনকর্মী রয়েছেন। তাদের ছেলে মেয়ে এবং পল্লীতে ঘরের মালিক ও দালালসহ আরো ৪০০জনের মতো আছেন।

দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীতে ১৬০০ যৌনকর্মীসহ প্রায় দুহাজার মানুষের বসবাস

পুলিশ সুপার মি: রহমান বলেছেন, এই লকডাউনে যেহেতু যৌনকর্মীদের আয় উপার্জন বন্ধ থাকবে, সেকারণে ২০দিন চলার জন্য প্রত্যেক যৌনকর্মীকে ২০কেজি করে চাল এবং তার সাথে পরিমাণমতো ডাল দেয়া হবে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, যৌনপল্লীর সব ঘর মালিক বা বাড়িওয়ালাকে যৌনকর্মীদের কাছ থেকে এই ২০দিনের ভাড়া না নিতে বলা হয়েছে।

রাজবাড়ী থেকে স্থানীয় একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, সেখানে পুলিশ প্রশাসনের এসব পদক্ষেপের বিষয়গুলো নিয়ে যৌন কর্মীদেেএকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে পল্লীর ভেতরে মাইকিং করা হয়েছে।

করোনায় মারা গেলো এক‌ই পরিবারের ৪ সদস্য


বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন একই পরিবারের ৪ জন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৩ জন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে।

সর্বশেষ ওই পরিবারের একজন ভিনসেন্ট ফুসকো বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সকালে একটি হাসপাতালে মারা যান। তার বোন এলিজাথে ফুসকো এবং তার আত্মীয় ও অ্যাটর্নি জেনারেল রোসেআন প্যারাডিসকো ফোদেরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানায়, আত্মীয়দের সঙ্গে রাতের খাবারে অংশ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি।

এর আগে ভিনসেন্টের মা গ্রেস ফুসকো (৭৩) বুধবার রাতে মারা যান করোনায়। তার কয়েক ঘণ্টা আগে মারা যান তার বড় ছেলে কারমিনে ফুসকো। কারমিনে ছিলেন এক ঘোড়া দৌড় প্রশিক্ষক। পেনসিলভানিয়ায় তার মৃত্যু হয়।

ডেইলি মেইল জানায়, ভিনসেন্টের বোন রিটা ফুসকো-জ্যাকসন (৫৫) মারা যান গত শুক্রবার। ভিনসেন্টর মা যখন মারা যান, তখন তিনি জানতেই না যে, তার দুই সন্তান ইতোমধ্যে পৃথিবী ছেড়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা বর্ণনা করেছেন ভিনসেন্টের ছোট বোন এলিজাবেথ। ১০ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ-এই নয় দিনে করোনা কেড়ে নিয়েছে এলিজাবেথের মা, দুই ভাই ও বোনের প্রাণ। আর ফোনেই মৃত্যুর সব সংবাদ পান তিনি। এখন ফোন ধরতে ভয় পান এলিজবেথ। কারণ এখনও তার দুই বোন ও এক ভাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি জানিয়েছেন, এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা সংকটাপন্ন এবং একজনের অবস্থা স্থিতিশীল।



বিশ্বে এখন সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত ১৭৯টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সারাবিশ্বে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১০ হাজার ৪৮ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৮৮ হাজার ৪৩৭ জন। যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ২৯৯ এবং মারা গেছে ২১৮ জন।

পণ্যের দাম বেশি রাখলে ১৬১২১ নম্বরে অভিযোগ করুন


ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিতে চালু হয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ভোক্তা অভিযোগ তথা 'ভোক্তা বাতায়ন' শীর্ষক হটলাইন সেবা। ১৬১২১ হটলাইন নম্বরে সপ্তাহের সাতদিন ২৪ ঘণ্টা এ সেবা চালু থাকবে। যেখানে কোনো ভোক্তা পণ্য বা সেবা ক্রয় করে প্রতারিত হলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ করতে পারবেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

রোববার (১৫ মার্চ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২০ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও হট লাইন উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি।


বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার-সুরক্ষিত ভোক্তা-অধিকার’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আজ বিশ্বভোক্তা অধিকার দিবস পালিত হচ্ছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোক্তাদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা বাজারব্যবস্থা হতে হবে ভোক্তাবান্ধব ও নিরাপদ। বাজার মানেই ক্রেতা-বিক্রেতার সহাবস্থান, ব্যবসা মানেই ক্রেতা-বিক্রেতার মিথষ্ক্রিয়া। ব্যবসায়ীদের সদিচ্ছা, চেষ্টা, আইনানুগ ব্যবসা পরিচালনাই গড়ে তুলতে পারে একটি সুস্থ এবং সহযোগীতামূলক উৎপাদক ব্যবসায়ী ভোক্তা সম্পর্ক।’

তিনি বলেন, ‘ন্যায্য মূল্য ভেজালহীন পণ্য বা সেবা পাওয়া ভোক্তাদের অধিকার। এ বিষয়ে সচেতন করতে পারলে জরিমানার প্রশ্নটা কমে যাবে, মানুষ আর অন্যায় কাজ করবে না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবুল কুমার সাহা।

বাণিজ্যসচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান তপন কান্তি ঘোষ, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এক টুকরা লেবুতেই ধ্বংস হবে করোনাভাইরাস: জানাল বিজ্ঞানী




বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এরইমধ্যে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। চীনের উহান থেকে সাপ ও বাদুড়ের মাধ্যমে ছড়িয়েছে এ মহামারি রোগটি।

করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার না হলেও এটি প্রতিরোধের উপায় জানিয়েছেন চীনের বেনজিং মিলিটারি হাসপাতালের সিইও প্রফেসর চেন হরেন। তার মতে, করোনা থেকে বাঁচাতে পারে এক টুকরা লেবু আর এক কাপ গরম পানি। এক্ষেত্রে একটি লেবু টুকরা করে কেটে য়ে এক কাপ গরম পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। এই লেবুর পানীয়তে থাকা প্রলিফেরাশন শরীরকে যে কোনো ধরনের ভাইরাস থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।


এক টুকরা লেবুতেই ধ্বংস হবে করোনাভাইরাস: জানালেন বিজ্ঞানী

প্রতিদিন এই পানীয় পান করার পরামর্শ দিয়েছেন এই গবেষক। তিনি জানান, লেবুর এই পানীয়টি করোনা প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করবে। এছাড়াও এটি শরীরের অন্যান্য ভাইরাস এবং ফ্লুর বিরুদ্ধেও লড়াই করতে সহায়তা করবে। লেবুর রসে রয়েছে কার্বলিক এসিড। যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, শরীরে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করে।

সম্প্রতি চীনের জানজান ইউনিভার্সিটির মেডিকেল সাইন্স বিভাগের গবেষক জিয়াও সেনমি মিনজি বলেছেন, করোনাভাইরাস বিশ্বের সব দেশেই ছড়িয়ে পরবে। সেটা আগে বা পরে। অনেক দেশেই এর কোনো পরীক্ষা করার যন্ত্র নেই। করোনা প্রতিরোধে ভিটামিন সি বেশি করে খেতে হবে। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মূলত সাধারণ একটি ভাইরাস। যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। দূর্ভাগ্যবশত এখনো করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি। তবে করোনা সাধারণত অন্যান্য রোগে ভুগছেন এমন মানুষের মধ্যে বিস্তার লাভ করে বেশি। করোনাভাইরাস মানুষসহ অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যেই সংক্রমণ ঘটায়।


করোনাভাইরাস যেভাবে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেইপ্রদেশের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস উৎপত্তিতে প্রথম জানতে পারে বিশ্ব। ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এখন সারা বিশ্বে মহামারী রূপ নিয়েছে। অনেক মানুষ এই রোগে মারা যাচ্ছেন।
তবে আমরা অনেকেই জানি না যে এই ভাইরাস কীভাবে শরীরে আক্রমণ করে আর কেনইবা মানুষের মৃত্যু হয়। ইনকিউবেশন বা প্রাথমিক লালনকাল
এ সময় ভাইরাসটি নিজেকে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত করে। শরীর গঠন করা কোষগুলোর ভেতরে প্রবেশ করে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার মাধ্যমে কাজ করে ভাইরাস।
করোনাভাইরাস, যার আনুষ্ঠানিক নাম সার্স-সিওভি-২। এই ভাইরাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে আপনার দেহে প্রবেশ করতে পারে। এ ছাড়া আশপাশে কেউ হাঁচি বা কাশি দিলে বা ভাইরাস
সংক্রমিত কোনো জায়গায় হাত দেয়ার পর আপনার মুখে হাত দিলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
শুরুতে এটি আপনার গলা, শ্বাসনালি ও ফুসফুসের কোষে আঘাত করে। এসব জায়গায় করোনার কারখানা তৈরি করে। পরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে দেয় এবং আরও কোষকে আক্রান্ত করে।
ইনকিউবেশনের সময়ে প্রথম সংক্রমণ ও উপসর্গ দেখা দেয়ার মধ্যবর্তী সময় স্থায়িত্ব একেকজনের জন্য একেকরকম হয়। তবে গড়ে তা পাঁচ দিন।


উপসর্গ
১০ জনের মধ্যে আটজন মানুষের জন্যই কোভিড-১৯ একটি নিরীহ সংক্রমণ। আর এর প্রধান উপসর্গ কাশি ও জ্বর।
শরীরে ব্যথা, গলাব্যথা এবং মাথাব্যথাও হতে পারে। তবে উপসর্গ দেখা দেবেই এমন নয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ায় প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করার ফলে গায়ে জ্বর আসে।
প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসের কারণে শুষ্ক কাশি হয়। কোষগুলো ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার কারণে অস্বস্তিতে পড়ার কারণে সম্ভবত শুকনো কাশি হয়ে থাকে। তবে অনেকের কাশির সঙ্গেই একটা পর্যায়ে থুতু বা কফ বের হওয়া শুরু করবে, যার মধ্যে ভাইরাসের প্রভাবে মৃত ফুসফুসের কোষগুলোও থাকবে।
এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে পরিপূর্ণ বিশ্রাম, প্রচুর তরল পান করা এবং প্যারাসিটামল খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয়ে থাকে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় এক সপ্তাহের মধ্যে মানুষ সুস্থ হয়ে যায়।
তবে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে কোভিড ১৯-এর আরও ক্ষতিকর একটি সংস্করণ তৈরি হয়। এই রোগ সম্পর্কে হওয়া নতুন গবেষণায় ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে যে রোগটির এই ধাপে আক্রান্তদের সর্দিও লাগতে পারে।
ভয়াবহ ব্যাধি
এই ধাপের পর যদি রোগ অব্যাহত থাকে, তা হবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসটি সম্পর্কে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ায়। যেই কেমিক্যালগুলো শরীরে বার্তা পাঠাতে থাকে, সেগুলোর প্রতিক্রিয়া তখন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রদাহ হয়।
লন্ডনের কিংস কলেজের ড. নাথালি ম্যাকডরমেট বলেন, ভাইরাসটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।


অতিজটিল রোগ
এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে যে, প্রায় ৬ শতাংশ করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ অতিজটিল পর্যায়ে যায়। এই ধাপে শরীর স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে অক্ষম হয় এবং মৃত্যুর বড় ধরনের সম্ভাবনা তৈরি হয়।
মূল সমস্যাটা হয়, এই ধাপে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে শুরু করে এবং সারা শরীরেই বিভিন্ন রকম ক্ষতি তৈরি করে।
রক্তচাপ যখন মারাত্মকভাবে নেমে যায়, তখন এই ধাপে সেপটিক শক পেতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি। এমনকি তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
আর শ্বাস-প্রশ্বাসে তীব্র সমস্যা হওয়ার উপসর্গ দেখা দেয় ফুসফুসে প্রদাহ ছড়িয়ে পড়লে। কারণ সেই সময় শরীরকে টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট অক্সিজেন পুরো শরীরে প্রবাহিত হতে পারে না। এর ফলে কিডনি রক্ত পরিশোধন ছেড়ে দিতে পারে এবং অন্ত্রের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

করোনার মাঝে এনজিওদের কিস্তি নির্যাতন!





করোনাভাইরাস নিয়ে সারা দুনিয়ার মানুষ যখন আতণ্কিত করোনার চেয়ে আরো বেশী চিন্তিত হয়ে মৃত্যুর চিন্তায় পড়েছে সারা দেশে এনজিওদের কিস্তির ওপর টাকা গ্রহীতা কয়েক লক্ষ গরীব অসহায় মানুষ।আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে করোনার কারনে।কোথা থেকে পরিষোধ করবে নব্য কাবলিওয়ালা সুদখোরদের প্রতি দিনের কিস্তির টাকা। এমন চাপে পড়ে দিশেহারা এসব গরীব দিন মজুর মানুষেরা।সুদখোর এ যুগের নব্য শকুনদের কিস্তির টাকা দিতে না পেরে পলাতক ও নিখোঁজ রয়েছে বহু মানুষ।মরণ ঘাতি করোনার চেয়েও ভয়ংকর এ যুগের সুদি মহাজনরা।প্রতি এক লাখ টাকার সুদ প্রায় ৬০% হিসেবে আদায় করা হচ্ছে নিরবে।এমন সংবাদ জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনইচ্ছক নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বেশ কয়েক গ্রামের অনেক বাসীন্দা।এসব লোকদের অভিযোগ করোনা ভাইরাস মহামারি রোগটি নিয়ে পৃথিবীর বাংলাদেশসহ বহু দেশ মহা চিন্তিত।আমরা এ রোগ নিয়ে যেমন চিন্তিত তার চেয়ে বেশী চিন্তায় পড়েছি মহাজন এনজিওদের প্রতিদিন কিস্তির টাকা পরিষোধ নিয়ে।নিষ্ঠুর নব্য শকুনেরা কোন করোনার কথা মানতে রাজি নয়। যে করেই হোক তাদের টাকা দিতেই হবে।না দিলে নানা হুমকি অত্যাচার অপমান নির্যাতন করছে নব্য কাবলিওয়ালা শকুনের দল।এমন বিপদে এসব অসহায় গরীব মানুষেরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কিস্তির টাকা পরিষোধ বন্ধ রাখার জন্য প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালতসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলের সহযোগীতা কামনা করেছে।

Wednesday, March 18, 2020

মানুষের জন্য ডা. জাফরুল্লাহর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আবিষ্কার করল মাত্র ২০০টাকা দামের করোনা শনাক্তের কিট



করোনা শনাক্ত করার কিট আবিষ্কৃত হল বাংলাদেশে। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মালিকাধীন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অঙ্গসংগঠন গণস্বাস্থ্য বায়োটেকের একদল কর্মী করোনা শনাক্ত করার কিট তৈরি করতে পেরেছেন। তাদের আবিষ্কৃত কিটটি তৈরি করতে খরচ পড়বে মাত্র ২০০ টাকা। খবরটি নিশ্চিত করে জাফরুল্লাহ চৌধুরি বলেছেন, সরকারের অনুমতি পেলে আমরা একমাসের মধ্যে ব্যাপক আকারে কিটটি বাজারে আনতে পারব। ১৭ মার্চ রাতে তিনি এ কথা বলেন।


উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের কিট আছে মাত্র ১৭৩২টি। কিটের অভাবে দেশে ব্যাপকভাবে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে আজই চীনের কাছে দশ হাজার করোনা টেস্টিং কিট চেয়েছে সরকার। কিটের পাশাপাশি দশ হাজার হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানারও চাওয়া হয়েছে।

কবি ও সাংবাদিক আলমগীর নিশাদ এক বক্তব্যে জানান,
সহজ উপায়ে-সুলভ দামে করোনাভাইরাস পরীক্ষার নতুন কীট (কেমিক্যাল) উদ্ভাবনের খবর শুনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে আলাপনের ইচ্ছা সংবরণ করতে পারলাম না।

আইইডিসিআরের কাছে এ ভাইরাস পরীক্ষার কীট ছিল মাত্র ২ হাজার পিস। ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে ৩শর মতো। সরকার চীনের কাছে ২০ হাজার পিস কীট চেয়েছে। কবে পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা চীনের সরবরাহ করা কীট ব্যয়বহুল এবং তা দিয়ে পরীক্ষার জন্যও প্রয়োজন উন্নত ল্যাবরেটরির। এই পরিস্থিতিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই উদ্ভাবন বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী ঘটনা।

করোনাভাইরাস মোকাবেলার প্রথম সোপান হলো লাখ লাখ মানুষের পরীক্ষা করা। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত নতুন কীট দিয়ে এখন যেকোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাত্র ৩শ টাকায় তা পরীক্ষা করা সম্ভব।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন মিললে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রতি মাসে ১ লাখ পিস কীট উৎপাদনের সক্ষমতা আছে তাদের। ডা. জাফরুল্লাহ জানান, ২শ টাকায় তারা এই কীট সরবরাহ করতে পারবে। কিন্তু ল্যাবে গিয়ে পরীক্ষা করতে কোনোভাবেই যেন ৩শ টাকার বেশি খরচ না পড়ে, সরকারকে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডা. জাফরুল্লাহর স্বপ্ন সীমাহীন, তিনি আশা করছেন আজকের মধ্যেই (বুধবার) তারা অনুমোদন পেতে পারেন।


(নবজাগরণ ডেক্সঃ)

করোনায় মারা গেলেন লন্ডন প্রবাসী আফরোজ মিয়া



করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন আরেক বাংলাদেশি। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। ওই ব্যাক্তির নাম আফরোজ মিয়া (৬৬)। তার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাগিরঘাট গ্রামে। পূর্ব লন্ডনের রয়েল লন্ডন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে মারা যান।

জানা গেছে, আফরোজ মিয়া ৮ দিন আগে অসুস্থ হয়ে রয়েল লন্ডন হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। যদিও দীর্ঘদিন ধরেই ডায়বেটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থ্যতায় ভুগছিলেন তিনি। প্রাণঘাতী এ ব্যাধির সাথে ৮ দিন যুদ্ধ করার পর অবশেষে গতকাল শুক্রবার মারা যান তিনি। নিহতের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। মরদেহটি স্বজনদের কাছে কিভাবে কখন হস্তান্তর করা হবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে রয়েল লন্ডন হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক বাংলাদেশির মৃত্যুর খবরে পূর্ব লন্ডনের বাঙালি পাড়ায় আতঙ্ক নেমে এসেছে।

গণমাধ্যমের তথ্য মতে, শুক্রবার পর্যন্ত ব্রিটেনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ১২জন। এর মধ্যে দুজন বাংলাদেশি। এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন ম্যানচেষ্টারে বসবাসরত এক বাংলাদেশি(৬০), যিনি ৫/৬ বছর আগে ইতালি থেকে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন ব্রিটেনে।

আইসিইউতে করোনায় আক্রান্ত বাংলাদেশি স্বামী-স্ত্রী

এদিকে স্পেনে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮ বাংলাদেশি। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী হন, ঢাকায় তাদের বাড়ি। রাজধানী মাদ্রিদে তারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত আটজনের মধ্যে তিনজন সিলেটের, ঢাকার দুইজন (স্বামী-স্ত্রী), যশোরের একজন বলে জানা গেছে। অপরজনের ঠিকানা জানা যায়নি। আটজনই বর্তমানে হাসপাতালে আছেন। ঢাকার দুইজনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে।

ঝিনাইদহে ৩ বছরের শিশুকে কুপিয়ে হত্যা!


ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে জান্নাতুল নেছা নামের ৩ বছরের এক শিশুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ীর ভাড়াটিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন স্বজনরা।

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় কোটচাঁদপুর শহরের রেলস্টেশন পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জান্নাতুল নেছা রেলস্টেশন পাড়ার টুক্কু মিয়ার মেয়ে।
নিহতের স্বজনরা জানান, রেলস্টেশন পাড়ায় টুক্কু মিয়ার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে দুলাল উদ্দিন নামের এক পুরাতন কাপড় ফেরিওয়ালা ভাড়ায় থাকতো। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টুক্কু মিয়ার স্ত্রী রান্না শেষে মেয়ে জান্নাতুলকে খুজে না পেয়ে ডাকাডাকি করে। এক পর্যায়ে ভাড়াটিয়া দুলালের ঘরে গিয়ে জান্নাতুলের ক্ষত-বিক্ষত লাশ দেখতে পায়।
পরে পুলিশের খবর দিলে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনা পর থেকে পলাতক রয়েছে ভাড়াটিয়া দুলাল উদ্দিন।
কোটচাঁদপুর থানার ওসি মাহবুবুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের‌ জন্য পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি ভাড়াটিয়া দুলাল তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আজ থেকে পাওয়া যাবে ২০০ টাকার নোট



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) বিকেলে নতুন ২০০ টাকার নোট ও স্মারক মুদ্রা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নোট ও স্মারক মুদ্রা উদ্বোধন করা হয়। 


আজ বুধবার (১৮ মার্চ) থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসসহ অন্যান্য শাখা অফিসগুলোতে পাওয়া যাবে ২০০ টাকার নোট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ২০০ টাকা মূল্যমান প্রচলনযোগ্য স্মারক ব্যাংক নোট বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

শতভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং ইউভি কিউরিং ভার্নিশযুক্ত গভর্নর ফজলে কবির স্বাক্ষরিত ২০০ টাকা মূল্যমান স্মারক ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৬ মিমি/৬৩ মিমি। স্মারক ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বাম পাশে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে নোটের মূল্যমান ‘২০০’ ও ‘২০০’ ডিজাইন হিসেবে মুদ্রিত রয়েছে। 



এছাড়া নোটের উপরের অংশে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবর্ষ ‘১৯২০-২০২০’, উপরে ডান দিকে কোনায় ইংরেজিতে মূল্যমান ‘২০০’ ও ডান দিকে নিচে কোনায় বাংলায় মূল্যমান ‘২০০’ লেখা রয়েছে। নোটের পেছন ভাগে ডান দিকে গ্রামবাংলার বহমান নদী ও নদীর পারের দৃশ্য (নদীর বুকে নৌকা, পারে পাটক্ষেত ও নৌকায় পাট বোঝাইয়ের দৃশ্য) এবং এর বাম পাশে বঙ্গবন্ধুর যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী থাকাকালীন একটি ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরিভাগে ইংরেজিতে ‘Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Centenary 1920-2020’ এবং নিচে বাম দিকে কোনায় ‘Birth Centenary’ লেখা রয়েছে। নোটের উপরে বাম কোণে বাংলায় মূল্যমান ‘২০০’ ও ডান কোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং নিচে ডান দিকের কোণে ইংরেজিতে মূল্যমান ‘২০০’ লেখা রয়েছে।

১০০ টাকা মূল্যমান স্মারক নোটটির জন্য পৃথকভাবে বাংলা ও ইংরেজি লিটারেচার সংবলিত ফোল্ডার প্রস্তুত করা হয়েছে। ফোল্ডার ছাড়া শুধু খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা এবং ফোল্ডার ও খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। এছাড়া স্বর্ণ স্মারক মুদ্রাটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে স্মারক বাক্সসহ ৫৩ হাজার টাকা এবং রৌপ্য স্মারক মুদ্রাটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে স্মারক বাক্সসহ ৩ হাজার ৫০০ টাকা।

কোটি টাকায় কেনা হয়েছে ১৮ লাখ টাকার ফ্রিজ





তিন চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট: কেনাকাটায় সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি

প্রায় ১৮ লাখ টাকার মোর্চুয়ারি ফ্রিজ কেনা হয়েছে দুই কোটি টাকায় * ৫টি ওটি লাইটের ক্রয়মূল্য পৌনে তিন কোটি টাকা * সাতক্ষীরার দুই প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায় ৮০ শতাংশই দুর্নীতি * জড়িতদের ছাড় নয় -দুদক চেয়ারম্যান * হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে ‘বোঝাপড়ার’ মাধ্যমে সাজানো দরপত্রে কোটি কোটি টাকা লোপাট



শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সাতক্ষীরার দুটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটায় সীমাহীন দুর্নীতির ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। ঠিকাদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালকের সিন্ডিকেট সরাসরি দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন।



লাশ রাখার জন্য মোর্চুয়ারি ফ্রিজসহ ৪১টি আইটেম কেনায় কয়েকগুণ বেশি টাকা দেয়া হয় ঠিকাদারকে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জন্য এসব কেনা হয়।

সাতক্ষীরা মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এবং ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) জন্য কেনাকাটায় ৮০ শতাংশই লোপাট হয়েছে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুর্নীতি প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, আমরা স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির দিকে নজর দিয়েছি। আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। এসব দুর্নীতিও অনুসন্ধান এবং তদন্তে বেরিয়ে আসবে। জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।


শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ৪১ ধরনের পণ্য কেনা হয়। পণ্যের তালিকায় আছে মোর্চুয়ারি ফ্রিজ। পচনের হাত থেকে রক্ষার জন্য কয়েকদিন এ ধরনের ফ্রিজে লাশ রাখেন অনেকেই। অন্যান্য আইটেমের সঙ্গে লাশ রাখার এই ফ্রিজ কেনায় ৯১ গুণ বেশি টাকা ঠিকাদারকে দিয়ে পরে তা হাতিয়ে নেন জড়িতরা।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা দামের মোর্চুয়ারি ফ্রিজ ক্রয় করা হয়েছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার টাকা দামে। একটি মোর্চুয়ারি ফ্রিজেই দুর্নীতি হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ধরনের কেনাকাটায় হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া একাই হাতিয়ে নেন ৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এমন ভয়ংকর দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে যুগান্তরের অনুসন্ধানে।

অন্যদিকে, ঢাকার বাইরে দুটি প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায় লুটপাট হয়েছে। কীভাবে সেখানে দুর্নীতি হয়, তা জানতে সাতক্ষীরার দুটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান- সাতক্ষীরা মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এবং ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) প্রতি নজর দেয়া হয় যুগান্তরের পক্ষ থেকে।

এতে দেখা যায়, ওই দুটি প্রতিষ্ঠানেও কেনাকাটায় ৮০ শতাংশই হরিলুট হয়েছে। অনুসন্ধানে পাওয়া এ সংক্রান্ত অভিযোগ ও তথ্য বিশ্লেষণ করে দুর্নীতির সত্যতা মিলেছে। বিভিন্ন ‘খাত’ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ও পরিচালক ডা. তওহীদুর রহমান দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই দুর্নীতিতে জড়ান।

এমন ঘটনাও ঘটেছে, কাঠযাতীয় সামগ্রী ও আসবাবপত্র ক্রয়ে পরিমাপ করে দুর্নীতি বের করতে গিয়ে গণপূর্ত অধিদফতরের অসাধু কর্মকর্তারাও ভাগ নিয়েছেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও টিআইবির সাবেক ট্রাস্টি ও সুজন সভাপতি হাফিজ উদ্দিন খান যুগান্তরকে বলেন, আমরা অনেক সময় অনুমান করে বলি দুর্নীতি হচ্ছে। অথচ অনুসন্ধানে অনুমানের সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে তা ভয়ংকর। এটা কোনো সরকারি দফতরের জন্য সেবার নমুনা হতে পারে না। কতিপয় চেয়ারধারী ব্যক্তির পকেট ভারি করার একটা পাকা রাস্তা।

তিনি আরও বলেন, যারা দুর্নীতি করে তাদের বিরুদ্ধে সিরিয়াস অ্যাকশন হয় না বলে তারা সাহস পায়। তাদের জন্য যেমন রাষ্ট্রীয় অর্থ তছরুপ হয়, তেমনি জনগণও সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে আমি মনে করি, এ ধরনের দুর্নীতিবাজদের বড় রকমের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। প্রয়োজনে দুদকের আইন সংশোধন করে রাষ্ট্রের অর্থ তছরুপকারীদের বিরুদ্ধে ফাঁসি কিংবা যাবজ্জীবনের সাজার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। বড় সাজা হলেও দুর্নীতি করার আগে দুর্নীতিবাজরা কিছুটা ভাববে।

অনুসন্ধানকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জন্য ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কেনাকাটার একটি তালিকা যুগান্তরের হাতে আসে।

এতে দেখা যায়, ওই দুই বছরেই পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া নিজের চেয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি করেন। সাজানো টেন্ডারের মাধ্যমে তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেন। তাদের কার্যাদেশ দিয়ে নিজের আখের গুছিয়ে নেন। যন্ত্রপাতি ক্রয়ে নির্ধারিত আর্থিক ক্ষমতাসীমার চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারের সীমাও ছাড়িয়ে যান।

এই ব্যয়ের ক্ষেত্রে তার ‘ক্রয়ক্ষমতা’ না থাকলেও রাজস্ব, উন্নয়ন ও থোক বরাদ্দের অর্থ দিয়ে যন্ত্রপাতি কেনার বন্দোবস্ত করেন। তৈরি করেন নানারকম খাত। উল্লিখিত অর্থবছরে পৃথক দুটি উন্মুক্ত সাজানো দরপত্র আহ্বান করেন তিনি।

প্রকৃতপক্ষে যারা মেডিকেলের জন্য ভারি যন্ত্রপাতি আমদানিকারক, বিক্রয়কারী ও সরবরাহকারী, তাদের দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিয়ে তৃতীয় শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী ঠিকাদারদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের কর্নধার মুন্সী ফখরুল হোসাইন, মেসার্স আরসিএস-এর কর্ণধার রবিউল আলম ও মেসার্স এএসএল এন্টারপ্রাইজের আফতাব আহমেদকে বেছে নেন ওই পরিচালক।

বিল উত্তোলনের পর বাড়তি পুরো অর্থ তাকে ক্যাশ বা ডলারে পরিশোধ করতে হবে- এ ধরনের সমঝোতা করেন। পরিকল্পনামতো ওই দুটি প্রতিষ্ঠানকেই কাজ পাইয়ে দেন তিনি। বাজার দরের চেয়ে কোনোটি ৫০ গুণ আবার কোনোটি ৯০-৯১ গুণ বেশি দরে আইটেমভিত্তিক দর গ্রহণ করেন। জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে তার বাছাই করা ওই দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেই কার্যাদেশ প্রদান করেন। পরে কায়দা করে ঠিকাদারকে দিয়ে বিলের নামে টাকা বের করে নেন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া মুন্সী ফখরুল হোসেনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, রবিউল আলমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৬ কোটি ১১ লাখ ৮ হাজার টাকা এবং আফতাব আহমেদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৪ কোটি ১৪ লাখ ৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এই দুর্নীতিতে সহায়তা করেন তিন ঠিকাদার।

অনুসন্ধানের তথ্য বলছে, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আহমেদ এন্টারপ্রাইজ ২৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা দামের একটি অপারেটিভ হিস্টেরোস্কপি মেশিন ৯৬ লাখ টাকায় সরবরাহ করে। এই একটি মেশিন ক্রয়ে ঠিকাদারকে অতিরিক্ত দেয়া হয় ৬৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের প্রতিটি হাইফ্লো অক্সিজেন থেরাপি মেশিন ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা দরে ৫টির জন্য অতিরিক্ত বিল করা হয় ২৮ লাখ টাকা। ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা দামের প্রতিটি হাইফ্লো অক্সিজেন মেশিন ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা দামে ক্রয় করা হয়। ৬টিতে অতিরিক্ত বিল দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

৬ লাখ টাকা দামের প্রতিটি ইলেকট্রিক ডেন্টাল ইউনিট মেশিন ৩৩ লাখ টাকা করে ক্রয় করা হয়। ৫টি মেশিন ক্রয়ে অতিরিক্ত বিল দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ২৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা দামের প্রতিটি ওটি লাইট কেনা হয়েছে ৭৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা করে।

এতে তিনটি ওটি লাইটে অতিরিক্ত বিল দেয়া হয় ১ কোটি ৬৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এভাবে ৫টি আইটেমে একত্রে অতিরিক্ত বিল তুলে দেয়া হয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

একইভাবে ওই অর্থ বছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আরসিএস এন্টারপ্রাইজের মালিক রবিউল আলমকে ফটোগ্রাফি মেশিন, শর্ট ওয়েভ মেশিন, টেবিল হস্ট, নিউরো সার্জারি মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রপাতি, মাইক্রো ওয়েভ, মোর্চুয়ারি ফ্রিজসহ ২৬টি আইটেমে অতিরিক্ত দেয়া হয় ১৬ কোটি ১১ লাখ ৮ হাজার টাকা।

একইভাবে ওই দুই অর্থবছরে অন্যান্য ১৫টি সামগ্রী ক্রয়ে বিলের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত দেয়া হয়েছে ১৪ কোটি ১৪ লাখ ৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দামের বেবি ইনকিউবেটরের প্রতিটির বিল দেয়া হয়েছে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তিনটি বেবি ইনকিউবেটর জন্য বাড়তি টাকা দেয়া হয় ২৫ লাখ টাকা।

ফটোগ্রাফি মেশিনের দাম ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অথচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরসিএসকে দেয়া হয় ১৬ লাখ টাকা, ১২ লাখ ৫৫ হাজার টাকার শটওয়েভ মেশিনের দাম শোধ করা হয় ২৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। ২৩ লাখ টাকা দামের তিনটি ডায়ালাইজার রিপ্রসেসিং মেশিন ক্রয় বাবদ অতিরিক্ত বিল দেয়া হয় ৯৩ লাখ টাকা।

২১ লাখ টাকা দামের কিডনি ডায়ালিসিস মেশিন ৪৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা করে ৬টি মেশিনে অতিরিক্ত বিল দেয়া হয় ১ কোটি ৪০ লাখ ৫২ হাজার টাকা। ৩২ হাজার টাকা দামের তিনটি সিআরআর ফর আইসিও মেশিনের জন্য অতিরিক্ত বিল দেয়া হয় ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একইভাবে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের ফিল্টার অপটিক ল্যারিংগোস্কোপ ২টি মেশিনের জন্য বাড়তি দেয়া হয় ৩৩ লাখ টাকা, ১৩ হাজার টাকা দামের বিআই পেপ অ্যান্ড সিপিএপির জন্য বাড়তি বিল দেয়া হয় ৮৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১ কোটি ২২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা দামের নিউরোসার্জারি মাইক্রোস্কোপের বিল শোধ করা হয় ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

একটি মেশিনেই অতিরিক্ত দেয়া হয় ৭৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা দামের ক্রাইয়োথেরাপি মেশিন ৫৬ লাখ, ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার পুভা মেশিন ৩২ লাখ টাকা, ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামের মাইক্রোওয়েভ ২১ লাখ টাকা, ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা দামের টাইল টেবিল উইথ হোস্ট-এর বিল ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১২ লাখ টাকা দামের ইএনটি সার্জারি কবলেশন সিস্টেম বিল দেয়া হয় ৯৬ লাখ টাকা করে।

১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামের কোবলেশন সিস্টেম সার্জারি আইটেমের বিল দেয়া হয় ২৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ৪ লাখ টাকা দামের কোয়ালিটি সিআরআর সিস্টেম ফিডবেচের দাম শোধ করা হয় ৭০ লাখ টাকা, ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের ডিফিকাল্ট এয়ারওয়ে ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বিল দেয়া হয় ৭১ লাখ ১০ হাজার টাকা, ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা দামের ক্যাপনোগ্রাফ মনিটরের প্রতিটির বিল দেয়া হয় ৪২ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২টা মনিটরেই দুর্নীতি ৫৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দামের পেশেন্ট মনিটর ৫১ লাখ টাকা, ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা দামের ডিএস ৩০০০ সিস্টেম পাম্প মডেলের মেশিন বাবদ অতিরিক্ত ৫১ লাখ টাকাসহ ২৬ ধরনের আইটেমের জন্য ১৬ কোটি ১১ লাখ ৮ হাজার টাকা বিল করে হাতিয়ে নেয়া হয়।

একইভাবে মেসার্স এএসএল নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫টি মেডিকেল সরঞ্জাম কেনায় বাজারমূল্যের চেয়ে ১৪ কোটি ১৪ লাখ ৩ হাজার টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়ে নেন ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।

কয়েকটি সরঞ্জামের বিলের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, ১ কোটি টাকা দামের ১০০০ এমএ ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের বিল দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা, ৭৭ লাখ ১৯ হাজার টাকার সার্জিক্যাল ইএনটি অপারেশন জুম মাইক্রোস্কোপের দাম ১ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা দেয়া হয়। অর্থাৎ একটি মেশিনেই দুর্নীতি ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

একইভাবে ৫৬ লাখ টাকা দামের হাইডেফিনেশন এন্ডোর্সকপি মনিটরের দাম ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বিল করা হয়েছে। একটিতেই দুর্নীতি ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এভাবে ১৫টি আইটেম কেনাকাটায় প্রায় সোয়া ১৬ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে।

ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে দুই বছরের শুধু কেনাকাটা খাতেই ৩৬ কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতির মিলেছে। এর বাইরেও তিনি নিয়োগ বদলি ও প্রশাসনিক কেনাকাটাসহ অন্যান্য খাতে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন বলে জানা গেছে। তার এসব দুর্নীতির বিষয় সামনে এলে টাকার বিনিময়ে তিনি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, তিনি নিয়মের মধ্যে থেকেই সব কাজ করেছেন। এতে ভুল হতেও পারে। সব হাসপাতালেই একইভাবে কেনাকাট হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার হাসপাতালের ক্ষেত্রে বাড়তি কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, সেটা এখনও প্রমাণিত হয়নি।

১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা দামের মোর্চুয়ারি ফ্রিজ ১ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার টাকায় কেনার বিষয়ে টেন্ডারে অংশ নিয়েছেন এমন একজন ঠিকাদার যুগান্তরকে বলেন, ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার মধ্যেও আমাদের ১০ পার্সেন্ট প্রফিট (লাভ) আছে। তাই আমরা সেই ‘প্রফিট’ হাতে রেখেই টেন্ডারে কত টাকায় কোন আইটেম সরবরাহ করব, তা দরপত্রের শর্তানুসারে উল্লেখ করে থাকি। এখানে যা হয়েছে তার তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

ঠিকাদার রবিউল আলমের মাধ্যমে ১৬ কোটি ১১ লাখ ৮ হাজার টাকা দুর্নীতি হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সরকারের নিয়ম অনুসারে টেন্ডার পেয়েছি। যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছি। এতে দুর্নীতি হয়েছে কি না, বলতে পারব না।

তবে অপর একজন ঠিকাদার স্বীকার করেন, তার কাছ থেকে কাজ পাওয়ার আগেই চেক নিয়ে নেন পরিচালক। কাজ পাওয়ার পর বিল পেতে-না-পেতেই কখনও ক্যাশ, কখনও ডলারে তাকে বাড়তি টাকা দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের মুখ বন্ধ।


সাতক্ষীরার দুই প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি : ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সাতক্ষীরা মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এবং ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) কেনাকাটা ও যন্ত্রপাতি সরবরাহের নামে খাত বানিয়ে দুর্নীতি করেন ওই জেলার সাবেক সিভিল সার্জন প্রতিষ্ঠান দুটির সাবেক অধ্যক্ষ ডা. তওহীদুর রহমান।

তিনিও সিন্ডিকেট করে সমঝোতার মাধ্যমে বেশকিছু আইটেমের নিম্নমানের পণ্য উচ্চমূল্যে কিনে নেয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেন। ২৬ কোটি টাকার কেনাকাটায় অন্তত ৮০ ভাগই তছরুপ হয়েছে বলে প্রাপ্ত তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তওহীদুর রহমান ম্যাটস ও আইএইটি- এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ইকুইপমেন্ট সামগ্রী, আসবাবপত্র, বইপত্র এবং খেলাধুলাসহ অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ের ব্যবস্থা করেন। এর অংশ হিসেবে তিনি ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ম্যাটসের জন্য বইপত্র-সাময়িকী খাতে ১ কোটি টাকা, খেলাধুলার সামগ্রী খাতে ৫০ লাখ টাকা, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি খাতে ৫০ লাখ টাকা, যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম খাতে ৫ কোটি টাকা, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ খাতে ৫০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র খাতে ২ কোটি টাকা, টেলিফোন ও অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম খাতে ৩ লাখ টাকা, একই তারিখের আরেকটি স্মারকমূলে বইপত্র ও সাময়িকী খাতে ২ কোটি টাকা, খেলাধুলা সামগ্রী খাতে ৫০ লাখ টাকা, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি খাতে ২০ লাখ টাকা, অন্যান্য সরঞ্জামাদি খাতে ১০ কোটি টাকা, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ খাতে ১ কোটি টাকা, আসবাবপত্র খাতে ৩ কোটি টাকা, টেলিফোন সরঞ্জাম খাতে ৫০ লাখ টাকাসহ ২৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখা) বরাবর আবেদনটি ছিল নিয়মবহির্ভূতভাবে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, চাহিদা বরাদ্দ প্রাপ্তির আগেই যথাযথ স্পেসিফিকেশন ছাড়া তওহীদুর রহমান ম্যাটসের ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড আদার্স এবং ফার্নিচার সামগ্রী ক্রয়ের জন্য তিনটি লটে ভাগ করে দরপত্র জারি করেন। একইভাবে আইএইচটি-এর ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড আদার্স এবং ফার্নিচার সামগ্রী ক্রয়ের তিনটি লটে ভাগ করে আরেকটি দরপত্র বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।

ম্যাটস ও আইএইচটির এই খাতওয়ারি খরচের ক্ষেত্রে তওহীদুর রহমান বিধিবহির্ভূতভাবে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া বাজারদর কমিটি, দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ও সার্ভে কমিটি গঠন করেন। তিনি কোনোরকম স্পেসিফিকেশন প্রস্তুত ছাড়াই দরপত্র আহ্বান করেন।

তিনি এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ মোকাররম হোসেন ও মেসার্স বেনিভোলেন্ট এন্টারপ্রাইজ পরস্পর যোগসাজশে বোঝাপড়ার মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে সাজানো দরপত্রের মাধ্যমে কেনাকাটা ও সরঞ্জাম সরবরাহের কাজ করেন। সাজানো দরপত্রে তিনি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে খ-গ্রুপে (আসবাবপত্র) সরবরাহের জন্য বেনিভোলেন্ট এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ প্রদান করেন।

জানা গেছে, ওই দুটি প্রতিষ্ঠানে কাঠের আসবাবপত্র সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয়েছে কি না, নিশ্চিত হতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে গণপূর্ত অধিদফতরের কারখানা বিভাগের দুই উপসহকারী প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তারা পরিমাপ করতে গিয়ে ঠিকাদার ও অধ্যক্ষ ডা. তওহীদুর রহমানের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে দুর্নীতির বিষয়টি চাপা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।



অভিযোগের বিষয়ে সাবেক অধ্যক্ষ ও সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান বলেন, আমার সময়ে কেনাকাটা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত টিমের কাছেই আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি। এর বাইরে তিনি আর কিছু বলতে চাননি।



করোনার ভ্যাকসিন আবিস্কার; প্রথম প্রয়োগে রোগী সুস্থ



করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগের প্রতিষেধক আবিস্কার করেছেন মার্কিন গবেষকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমন ভ্যাকসিন তৈরির জন্য লম্বা সময় চাইলেও তার মধ্যে আবিষ্কৃত ওষুধ প্রয়োগ করে করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।

গত ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। তবে তার চিকিৎসা শুরু হয় স্নোহোমিশ হেলথ ডিস্ট্রিক্টে। ওই হাসপাতালে অ্যাডিসন এবং উইলকারসনসহ কয়েকজন দক্ষ ডাক্তারকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়। এরপর থেকে এর প্রতিষেধক নিয়ে কাজ শুরু করেন সেখানকার গবেষকরা।

রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের চিকিৎসকদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে ওই বিভাগের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় ওষুধ প্রশাসনের কাছ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘রেমডেসিভির’ অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ প্রয়োগের অনুমোদন পান।

অনুমতি পাওয়ার পর তারা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে পরীক্ষামূলকভাবে একটি অ্যান্টিভাইরালের ব্যবহার শুরু করে। ওষুধটি তৈরি করে ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক গিলিড ফার্মাসিটিউক্যালস।

ওই চিকিৎসক দলের প্রধান ছিলেন দিয়াজ নামে এক ডাক্তার। তিনি বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়ার পর তিনি যে অ্যান্টিভাইরাল ব্যবহারের অনুমোদন পান তা ওই রোগীর ওপর প্রয়োগের কয়েক দিন পর তার জ্বর কমতে শুরু করে এবং তিনি সুস্থ বোধ করেন। জানুয়ারি ৩১ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই রোগী বাড়ি ফেরেন।

মার্কিন এ চিকিৎসক বলেন, ‘এটাই করোনাভাইরাসের চিকিৎসা হিসেবে প্রথম এবং একমাত্র সফলতা হলেও এ পদ্ধতি যে কাজ করছে তা বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে।’

অন্যদিকে ফ্যাপিলাভির নামে আরেকটি অ্যান্টিভাইরাল নভেল করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেছে চীন।চীনের ঝেঝিয়াং প্রদেশের সরকার ফ্যাপিলাভির অ্যান্টিভাইরালটি বাজারজাতকরণের অনুমতি দিয়েছে। করোনা ভাইরাসের এটিই প্রথম কোনো প্রতিষেধক যা দেশটির ন্যাশনাল মেডিকেল প্রোডাক্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনেরও অনুমোদন পেয়েছে। 


–চায়না ডেইলি

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি হবে না করোনা ভ্যাকসিন : জার্মান




যুক্তরাষ্ট্রের জন্য করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্যে জার্মান এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে ট্রাম্প মোটা অংকের টাকা দিতে চাইলেও তারা তাতে রাজি হয়নি। জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবের কাছে বিক্রি হবে না জার্মান।

করোনা ভাইরাস ঠেকাতে ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছে জার্মানি ভিত্তিক কোম্পানি কিউরভ্যাক। এ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি।

অসমর্থিত এক সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওয়েল্ট অ্যাম সোনট্যাগের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেবল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভ্যাকসিন তৈরির জন্য জার্মান বিজ্ঞানীদেরকে বড় অংকের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তাদের কাজের ওপর একচেটিয়া অধিকার নিশ্চিত করতে চাইছেন ট্রাম্প। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে কিউরভ্যাক।

কিউরভ্যাকের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হপ বায়ো টেক হোল্ডিং-এর প্রধান ক্রিস্টফ হেটিচ রবিবার (১৫ মার্চ) সংবাদপত্র মানহাইমার মর্নকে বলেন, ‘আমরা গোটা বিশ্বের জন্য ভ্যাকসিন বানাতে চাই, একক কোনও দেশের জন্য নয়।’

জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনস স্পান সেদেশের সরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একই রকমের ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে সরকারের সঙ্গে কিউরভ্যাকের আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

ঘরজামাইয়ের সন্তান নাজিম উদ্দীন এখন কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক!



কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে নির্যাতনকারী আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার- রাজস্ব) নাজিম উদ্দীনের বাবা ছিলেন ঘরজামাই। যশোরের মণিরামপুরের দরিদ্র পরিবারের সেই নাজিম উদ্দীন এখন কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক।

দিনমজুরের সন্তান নাজিম উদ্দিন নামে-বেনামে এই সম্পদের মালিক বনে গেছেন। স্ত্রী ও শ্বশুরের নামে কোটি টাকার জমি ক্রয় ও আলিশান বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। মনিরামপুর পৌরশহরে ৮ শতাংশ জমির উপর পাঁচতলা বিশিষ্ট অট্টালিকা নির্মাণাধীন রয়েছে তার। ইতোমধ্যে চারতলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

মণিরামপুরের কাশিপুর গ্রামে গেলে স্থানীয়রা জানান, মনিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের মৃত নিছার আলীর ছেলে নাজিম উদ্দীন। পিতা নিছার আলী ঘরজামাই থাকতেন কাশিপুর গ্রামে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান নাজিম উদ্দীন মেধাবী হওয়ায় লেখাপড়ায় স্থানীয়রা সহযোগিতা করেছেন। তার দিনমজুর বাবা জামায়াতের সমর্থক ছিলেন। প্রথমে নিছার আলী টালি ভাটার শ্রমিকের কাজও করেছেন।

পিতা জামায়াত ঘরানার হলেও নানার পরিবার আওয়ামী লীগ সমর্থক হওয়ায় নাজিম উদ্দীনের উপরের উঠার সিঁড়ি পেতে অসুবিধা হয়নি। নাজিম উদ্দীন মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে মনিরামপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজে লেখাপড়া করেছেন।

একই কলেজের ছাত্রলীগের তৎকালীন আহবায়ক সন্দীপ ঘোষ জানান, নাজিম উদ্দীন ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলো। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার, বাগেরহাট ও মাগুরার মহাম্মদপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগসহ এক বৃদ্ধকে টেনে-হিঁচড়ে মারতে মারতে নেয়ার ভিডিও ইতোমধ্যে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসিল্যান্ড থাকাকালীন তিনি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে বিপুল অংকের অর্থ কামাই করেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।


অনুসন্ধানে জানা যায়, মনিরামপুর পৌর এলাকায় ১৪.৬৯ শতাংশ জমি ৪৬ লাখ টাকায় কেনেন নাজিম উদ্দীন। যা গাংড়া গ্রামের আকবর আলীর কাছ থেকে ২০১৯ সালের ১৫ই জুলাই তার শ্বশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (অব.) আব্দুর রাজ্জাকের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। কিন্তু জমির সেলামি তোলা হয় ৩০ লাখ টাকা।

জমির দাতা (সাবেক মালিক) আকবর আলী জানান, স্থানীয় মোসলেম উদ্দীনের মধ্যস্থতায় ৪৬ লাখ টাকায় তিনি ওই জমি বিক্রি করেন। যা আব্দুর রাজ্জাকের জামাই ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীন কিনেছেন। কিন্তু দলিল করা হয় নাজিম উদ্দীনের শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাকের নামে। মনিরামপুরে আরও ৮ শতক জমি ১৩ লাখ কেনা হয়। যা উপজেলার কাজির গ্রাম মো. মোকলেছুর রহমানের কাছ থেকে ৬ শতক এবং তার স্ত্রী মোছা. নাজমুন নাহার রুপার কাছ থেকে ২ শতক সর্বমোট ৮ শতক জমি নাজিম উদ্দীনের স্ত্রী সাবরিনা সুলতানার নামে ২০১৮ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রি করা হয়।

ব্যাপার হচ্ছে, রেজিস্ট্রিকৃত জমি নাজিম উদ্দীনের স্ত্রী সাবরিনা সুলতানার নামে হলেও সেখানে স্বামীর নাম না দিয়ে বাবা (নাজিম উদ্দীনের শ্বশুর) আব্দুর রাজ্জাকের নাম দেয়া হয়েছে। এই জমির উপর নির্মাণ করা হচ্ছে পাঁচতলা বিশিষ্ট বিশাল অট্টালিকা। ইতোমধ্যে যার চারতলা সম্পন্ন হয়েছে।





সুলতানা পারভীন প্রত্যাহার, কুড়িগ্রামের নতুন ডিসি রেজাউল করিম

নতুন ডিসি রেজাউল করিম।

কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতনের ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে।

সোমবার এ আদেশ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এর আগে আরেক প্রজ্ঞাপনে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার রাজস্ব) নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফ এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি।

এছাড়া সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে ডিসি সুলতানা পারভীনের অনিয়ম নিয়েও প্রতিবেদন তৈরি করেন আরিফুল। এসময় একাধিকবার তাকে ডিসি অফিসে ডেকে নিয়ে হুমকি দেয়া হয়।

এ ঘটনার জেরে গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফের বাসায় হানা দিয়ে তাকে তুলে ডিসি অফিসে এনে নির্যাতন করা হয়। এরপর আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে ওই রাতেই তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই ডিসি সুলতানা পারভীন আলোচনায় ছিলেন।

এ ঘটনা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নজরে এলে শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার অফিসের কর্মকর্তারা তদন্ত করে প্রতিবেদনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়। রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ডিসির কাজে অনিয়ম পাওয়ায় তাকে প্রত্যাহারের আদেশ দেয়।

Tuesday, March 17, 2020

ইতিহাস থেকে পাওয়া অতীতের ৩টি শতাব্দীর ২০তম বছর গুলো ছিল মানব মৃত্যুকূপ



(১) ১৭২০ ইং সালে এই পৃথিবী আক্রান্ত হয় প্লেগ রোগে এতে মৃত্যু ঘটে ২০ কোটি মানুষের।

পৃথিবীর ইতিহাসে কোন একক রোগে এত মানুষের মৃত্যু আর ঘটেনি। ঐ সময়ে শুধু ইউরোপই হারিয়েছিল তাদের অর্ধাংশ জনসংখ্যা।

এই মৃত্যুর নাম দেওয়া হইয়েছিল ‘দ্য ব্ল্যাক ডেথ’ বা কালো মৃত্যু।
মধ্যযুগীয় ইতিহাস গবেষক ফিলিপ ডেইলিভার তার এক নিবন্ধনে লিখেছেন, চার বছর মেয়াদি প্লেগ মহড়ায় ইউরোপের ৪৫-৫০ ভাগ জনসংখ্যা বিলীন হয়ে যায়, যা প্রায় ২০ কোটি।।


(২) ১৮২০ ইং সালের কলেরা: এতে মৃত্যু ঘটে ৪ কোটি মানুষের।

১৮২০ ইং সালে সারাবিশ্ব কলেরায় আক্রান্ত হলে কলেরা রুপ নেয় মহামারিতে।
ইতিহাসবিদদের মতে, সেই সময়ে অল্পদিনের ব্যবধানে হাজার হাজার আক্রান্ত ব্যক্তিরা মারা যান এবং প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা এমন হারে বেড়েছিল, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক ছিল। বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে ঐ সময়ের কলেরা এতটাই মহামারি ছিল যে- চীন, রাশিয়া ও ভারতে কলেরায় আক্রান্তে অন্তত ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটে।


(৩) ১৯২০ ইং সালের স্প্যানিস ফ্লু: এতে মৃত্যু ঘটে প্রায় ১০ কোটি মানুষের।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষত না শুকাতেই পৃথিবীজুড়ে শুরু হয়েছিলএই নতুন যুদ্ধ।
সারা পৃথিবীকে গ্রাস করেছিল মরণব্যাধি সেই ‘স্প্যানিস ফ্লু’। ‘স্প্যানিস ফ্লু’ নামের সেই মহামারীতে দুই বছরে সারা পৃথিবীতে মানুষ মারা গিয়েছিল ০৪ কোটির বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদিও বলছে সংখ্যাটি আসলে পাঁচ কোটি। কারণ ভারতবর্ষে যে এক কোটি মারা গিয়েছিলেন সেটি প্রথম রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কোনো কোনো গবেষকের মতে, মৃতের সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে প্রায় ১০ কোটি।

এই জীবাণু ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ায় নির্বিচারে বেশি প্রকোপ যেন দেখা গিয়েছিল ২০-৪০ বছরের মানুষের মধ্যে।

উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে আক্রমণ হলেও সারা পৃথিবীর কোনো দেশই মুক্তি পায়নি এ জ্বরের ছোবল থেকে।

মৃতের সংখ্যা এত বিশাল ছিল যে, ট্রলিতে লাশ বোঝাই করে শহর থেকে সরাতে হয়েছিল।

আল্লাহ্‌ ভালো জানেন চলমান ২০২০ইং সালটা ও কি বর্তমান মানুষদেরর জন্য আরেক মৃত্যুকূপ?


পরিশেষে বলতে চাই, এবার ২০২০ ইং সালে আবির্ভূত "করোনা" যেন মানুষের জন্য আরো একটি ভয়ঙ্কর মৃত্যু কূপ। তাই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে আমাদের দোয়া ও চাওয়া মহান রব আল্লাহ্‌ রাব্বুল ইজ্জত ওয়াল জালাল দয়াকরে বিশ্বের এই সমগ্র মানব মণ্ডলীকে চলনান শতকের ২০ সাল চক্রিয় মহামারী থেকে যেন হেফাজত করেন আমীন

‘করোনার কারণে এখনো বার বন্ধ করার সময় হয়নি’- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী




করোনার কারণে দেশে এখনো এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরী হয়নি যাতে করে নগরীর পানশালা বা বারগুলো বন্ধ রাখতে হবে। সোমবার (১৬ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

দেশ থেকে যে কোনো মূল্যে মাদক নির্মূল করা হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এই কার্যক্রমকে সফল করতে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা নিরাময় কেন্দ্রগুলোর মানোন্নয়নে সরকার আর্থিক অনুদান দেবে।


দেশ থেকে মাদক নির্মূলে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা মাদকাশক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর মানোন্নয়নের জন্য অনুদান দেয়ার এই কার্যক্রম দুপুরে নিজ মন্ত্রণালয়ে উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। শুরু করেছে সরকার। এ সময় দেশে এ বছর ৯৩টি বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে সরকারি অনুদান দেয়া হয়।

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে কোনো মূল্যে দেশ থেকে মাদক নির্মূল করতে হবে। তিনি জানান, করোনার কারণে আপাতত কোনো বার বন্ধ করা হচ্ছে না কারণ, নগরীর বেশিরভাগ বারই পাঁচতারা হোটেলের অভ্যন্তরে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের ২২ জেলায় এখনো বেসরকারি উদ্যোগে কোনো মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। এসব জায়গায় ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ যদি নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তুলতে চায় তবে, সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

উল্লেখ্য সোমবার (১৬ মার্চ) দেশে করোনা ভাইরাসে নতুন করে আরও তিন জন আক্রান্ত হয়েছে। ফলে এর সংখ্যা বেড়ে আট জনে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাপারে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, নতুন করে আক্রান্ত তিন জনই একই পরিবারের এবং তাদের মধ্যে দুজনই শিশু ।

ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া এড়াতে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (১৬ মার্চ) দুপুরে শিক্ষা উপমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। সেই সাথে সব ধরনের সমাবেশও বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন ছাত্রদল করা ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম




ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন কুড়িগ্রামে সাংবাদিক পেটানো ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীন। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের মেইন বিল্ডিংয়ে শিবির ব্লকের দিকেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার।
আরডিসি নাজিম উদ্দীনের ঢাবির সহপাঠী ও ঘনিষ্ট কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই সময় শিবিরের সঙ্গে বেশ সখ্যতা ছিল নাজিমের। শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডাও দিতেন তিনি। তবে, ছাত্রদলের অ্যাক্টিভ কর্মী হিসেবেই সবাই তাকে জানতেন। ছাত্রজীবন থেকেই ‘বদমেজাজি’ নাজিম মেধাবিও ছিলেন। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন নাজিম উদ্দীন।
নাজিম উদ্দীনের বাবা নেছার আহমেদ জামায়াতের সমর্থক ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ভরতপুরে। অতিদরিদ্র নেছার আহমেদ উপজেলার কাশিপুরে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। ভাই-বোনের মধ্যে নাজিম উদ্দীন বড়।
তার এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, খুবই কষ্ট করে নাজিমকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন তার বাবা। তার স্কুল-কলেজের পরীক্ষার ফি’টাও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জোগাড় করে দিতেন। বাবা গরিব ও নাজিম বেশ মেধাবি হওয়ায় স্কুলের বেতনও নিত না কর্তৃপক্ষ।
মনিরামপুর সরকারি পাইট উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ও মনিরামপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন নাজিম উদ্দীন। কলেজে পড়াকালীনই ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।
নাজিম উদ্দীন যখন মনিরামপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। তখন ওই কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন সন্দ্বীপ ঘোষ। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, ‘নাজিম উদ্দীন ছাত্রদল করতো। সে নিয়মিত ছাত্রদলের মিছিলে যেত।’
তিনি জানান, নাজিম উদ্দীন মামা বাড়িতে মানুষ হয়েছেন। তার মামারাও এন্টি-আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে জানার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভাই আর কত, আমি তো আর পারছি না। এখন বাসায় এলাম।’
কলেজ জীবনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘ভাই আমি ব্যস্ত, পরে কথা বলি।’ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান দাবি করেন, নাজিমের পরিবার (বাবা ও মামারা) মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনীতি করেন না।
উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইউনুস আলী বলেন, ‘তারা (নাজিমের পরিবার) বিএনপি জামায়াতের লোক।’ তবে, ওই ইউনিয়নের মেম্বর গাজী মনসুর রহমান দাবি করেন, ‘তারা (নাজিমের পরিবার) রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগের কেউ কেউ বলছেন, নাজিমের পরিবার আগে যাই করতো না কেনো, এখন আওয়ামী লীগ করে।
এদিকে, সোমবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মহম্মদপুর বাজারে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাংবাদিক নির্যাতন করে সমালোচিত কুড়িগ্রামের কুখ্যাত আরডিসি ও মাগুরার মহম্মদপুরের সাবেক এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।


(সময়টিভি)

টাকা চুরির অভিযোগে ছাত্রীকে নির্যাতন!








উত্তর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সানজিদা আক্তার কে টাকা চুরির অভিযোগে বেদম প্রহার করে রক্তাক্ত করে শিক্ষিকা শাহনাজ পারভীন।
১৬ মার্চ সোমবার বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটে। সানজিদা আক্তার ৬ ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী এবং একি ক্লাসের অপর এক ছাত্রী থেকে তিরিশ টাকা চুরির অভিযোগ উঠে।
চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে , স্কুল শিক্ষিকা শাহনাজ পারভীন শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তারকে বেদম পিটুনি দেয়। শিক্ষার্থীর অবস্থা ও মারের দাগ দেখে পিতা মোঃ খোরশেদ আলম তার মেয়েকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

ছাত্র-ছাত্রীদের কে নির্যাতন করে নয় ভালোবাসা দিয়ে বুঝাতে হবে।

Monday, March 16, 2020

"করোনা প্যানিক" নিবেন না, প্লিজ


করোনা ভাইরাস থেকে
বাংলাদেশ কেনো মুক্ত?
১.চীনের উহানের তামপাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রির নিচে ও কাছাকাছি।
২. ইরানে ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি।
৩. দক্ষিণ কোরিয়ায়ও ১০ ডিগ্রির অনেক নিচে।
৪. ইতালিতে ১৫ ডিগ্রির নিচে।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে মোটামুটি ১৫ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা আছে এমন ক্ষেত্রে করোনা খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি।
প্রশ্নঃ হচ্ছে, কত তাপমাত্রা নিরাপদ?
দেখা যাচ্ছে এ পর্যন্ত প্রায় সব গবেষণা ও বিশেষজ্ঞরা মোটামুটি একমত যে, তাপমাত্র ২১-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে করোনা ভাইরাস টিকতে পারে না।
যেমন:-
১. হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. প্রফেসর জন নিকোলস বলেছেন, সূর্যের আলো, তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় করোনা টিকতে পারে না। সূর্যের আলো ভাইরাস অর্ধেক ক্ষমতা শেষ করে দেয়। বাকি অর্ধেক ২ থেকে ২০ মিনিট টিকে থাকে।
২. জার্মান সেন্টার ফর এক্সপেরিমেন্টাল এন্ড ক্লিনিক্যাল ইনফেকশন রিসার্স সেন্টারের গবেষক থমাস পিচম্যান বলেছেন, সূর্যের তাপে ভাইরাসটি টিকতে পারে না।
৩. জার্মানির জার্নাল অব হসপিটাল ইনফেকশনের প্রকাশিত রিসার্সে বলা হয়েছে, ভাইরাসটি ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৫ দিন বাঁচতে পারে। সর্বোচ্চ ২৫ ডি.সে. এ কয়েক দিনের বেশি বাঁচে না।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশ কেন করোনা মুক্ত?
আসুন দেখে নেই চলতি মাসের বাংলাদেশের তাপমাত্র :-
১ মার্চ থেকে আজ ১২ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের তাপমাত্রা যথাক্রমে ৩২, ৩১, ৩০, ৩০, ৩০, ৩১, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। লক্ষ্য করুন, আক্রান্ত দেশগুলোর তুলনায় শুরু থেকেই বাংলাদেশের তাপমাত্রা কিন্তু অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা করোনা ধ্বংসে তাপমাত্রার যে সীমারেখা বলছেন তার থেকে বাংলাদেশের তাপমাত্রা অনেক উপরে। সুতরাং বাংলাদেশে করোনা ছড়ানোর সুযোগ আপাতত নেই বললেই চলে। তারমানে, প্রাকৃতিক এই প্রতিষেধকে ঢেকে আছে আমাদের বাংলাদেশ। সৃষ্টি কর্তার এটি অশেষ কৃপা।
"ইয়া, আল্লাহ মালিক, আমরা আপনার কাছে আমাদের লাখোকোটি শুকরিয়া জানাচ্ছি। একমাত্র আপনিই রক্ষাকারী, আমীন।"
সুতরাং সবার কাছে আকুল আবেদন, প্যানিক ছড়ানো বা আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই বরং স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন, দেশ দশের মঙ্গলে কাজ করি আসুন।
বিঃদ্রঃ:- বাংলাদেশে যদি করোনার রোগী বাইরে থেকে ভাইরাস নিয়ে আসেও আর যদি দেশের তাপমাত্রা এমনই থাকে তাহলে ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে নির্মূল হয়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে নিজেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে ভুল করবেন না আশা করি।
আপনি আপনার পরিবার-পরিজন ও আশেপাশের সবাইকে নিয়ে সুস্থ্য থাকুন, ভালো থাকুন।
সচেতন থাকুন, সচেতনতা'র বিকল্প নাই।
সবার জন্য শুভেচ্ছা রইল।