Wednesday, March 18, 2020

ঘরজামাইয়ের সন্তান নাজিম উদ্দীন এখন কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক!



কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে নির্যাতনকারী আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার- রাজস্ব) নাজিম উদ্দীনের বাবা ছিলেন ঘরজামাই। যশোরের মণিরামপুরের দরিদ্র পরিবারের সেই নাজিম উদ্দীন এখন কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক।

দিনমজুরের সন্তান নাজিম উদ্দিন নামে-বেনামে এই সম্পদের মালিক বনে গেছেন। স্ত্রী ও শ্বশুরের নামে কোটি টাকার জমি ক্রয় ও আলিশান বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। মনিরামপুর পৌরশহরে ৮ শতাংশ জমির উপর পাঁচতলা বিশিষ্ট অট্টালিকা নির্মাণাধীন রয়েছে তার। ইতোমধ্যে চারতলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

মণিরামপুরের কাশিপুর গ্রামে গেলে স্থানীয়রা জানান, মনিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের মৃত নিছার আলীর ছেলে নাজিম উদ্দীন। পিতা নিছার আলী ঘরজামাই থাকতেন কাশিপুর গ্রামে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান নাজিম উদ্দীন মেধাবী হওয়ায় লেখাপড়ায় স্থানীয়রা সহযোগিতা করেছেন। তার দিনমজুর বাবা জামায়াতের সমর্থক ছিলেন। প্রথমে নিছার আলী টালি ভাটার শ্রমিকের কাজও করেছেন।

পিতা জামায়াত ঘরানার হলেও নানার পরিবার আওয়ামী লীগ সমর্থক হওয়ায় নাজিম উদ্দীনের উপরের উঠার সিঁড়ি পেতে অসুবিধা হয়নি। নাজিম উদ্দীন মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে মনিরামপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজে লেখাপড়া করেছেন।

একই কলেজের ছাত্রলীগের তৎকালীন আহবায়ক সন্দীপ ঘোষ জানান, নাজিম উদ্দীন ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলো। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার, বাগেরহাট ও মাগুরার মহাম্মদপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগসহ এক বৃদ্ধকে টেনে-হিঁচড়ে মারতে মারতে নেয়ার ভিডিও ইতোমধ্যে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসিল্যান্ড থাকাকালীন তিনি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে বিপুল অংকের অর্থ কামাই করেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।


অনুসন্ধানে জানা যায়, মনিরামপুর পৌর এলাকায় ১৪.৬৯ শতাংশ জমি ৪৬ লাখ টাকায় কেনেন নাজিম উদ্দীন। যা গাংড়া গ্রামের আকবর আলীর কাছ থেকে ২০১৯ সালের ১৫ই জুলাই তার শ্বশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (অব.) আব্দুর রাজ্জাকের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। কিন্তু জমির সেলামি তোলা হয় ৩০ লাখ টাকা।

জমির দাতা (সাবেক মালিক) আকবর আলী জানান, স্থানীয় মোসলেম উদ্দীনের মধ্যস্থতায় ৪৬ লাখ টাকায় তিনি ওই জমি বিক্রি করেন। যা আব্দুর রাজ্জাকের জামাই ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীন কিনেছেন। কিন্তু দলিল করা হয় নাজিম উদ্দীনের শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাকের নামে। মনিরামপুরে আরও ৮ শতক জমি ১৩ লাখ কেনা হয়। যা উপজেলার কাজির গ্রাম মো. মোকলেছুর রহমানের কাছ থেকে ৬ শতক এবং তার স্ত্রী মোছা. নাজমুন নাহার রুপার কাছ থেকে ২ শতক সর্বমোট ৮ শতক জমি নাজিম উদ্দীনের স্ত্রী সাবরিনা সুলতানার নামে ২০১৮ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রি করা হয়।

ব্যাপার হচ্ছে, রেজিস্ট্রিকৃত জমি নাজিম উদ্দীনের স্ত্রী সাবরিনা সুলতানার নামে হলেও সেখানে স্বামীর নাম না দিয়ে বাবা (নাজিম উদ্দীনের শ্বশুর) আব্দুর রাজ্জাকের নাম দেয়া হয়েছে। এই জমির উপর নির্মাণ করা হচ্ছে পাঁচতলা বিশিষ্ট বিশাল অট্টালিকা। ইতোমধ্যে যার চারতলা সম্পন্ন হয়েছে।





No comments:

Post a Comment